ধর্ষণচেষ্টার বিষয়ে অভিযোগ জানানোর ১২ দিনেও অভিযুক্ত শিক্ষককে স্থায়ী অব্যাহতিসহ দুই দাবি পূরণ না হওয়ায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারও বিক্ষোভ করেছেন একটি বিভাগের শিক্ষার্থীরা। আগামী বৃহস্পতিবার মধ্যে দাবি পূরণ না হলে কঠোর কর্মসূচি শুরুর আলটিমেটাম দিয়েছেন তাঁরা।
আজ সোমবার দুপুর ১২টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। সেই কর্মসূচি থেকে এই আলটিমেটাম দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীদের দুই দাবি হলো অভিযুক্ত শিক্ষককে স্থায়ী অব্যাহতি এবং তাঁর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় বাদী হয়ে ফৌজদারি মামলা করা।
বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বিভাগের চারজন শিক্ষার্থী বলেন, ভুক্তভোগী ছাত্রী উপাচার্যকে অভিযোগ দেওয়ার ১২ দিন পার হলেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা প্রশাসন নিতে পারেনি। শিক্ষার্থীরা এত দিন ক্লাস বর্জনসহ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে আসছে। আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের নিয়ে কঠোর আন্দোলন শুরু করা হবে।
বিক্ষোভ শেষে দুই দাবিতে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার ও লিফলেট বিতরণ করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এর আগে গত ৩১ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের একটি বিভাগের এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার লিখিত অভিযোগ দেন এক ছাত্রী। এর পর থেকে ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা দুই দাবিতে ক্লাস বর্জন কর্মসূচি পালন করে আসছেন। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একাংশ এবং ছাত্র ইউনিয়নের নেতা-কর্মীরাও এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই অধ্যাপককে এর মধ্যে সাময়িক অপসারণ করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হেনস্তা, যৌন নিপীড়ন ও ধর্ষণচেষ্টার মতো ঘটনার বিচার হয় সাধারণ দুটি কমিটির মাধ্যমে। একটি অভিযোগ কমিটি, অন্যটি যৌন নিপীড়ন নিরোধ সেল। কোনো ছাত্রী অভিযোগ দিলে প্রথম তদন্ত অভিযোগ কমিটি করে। এ কমিটি অভিযুক্ত ও ভুক্তভোগীর সাক্ষাৎকার নিয়ে যৌন নিপীড়ন নিরোধ সেলে প্রতিবেদন জমা দেয়। এরপর নিরোধ সেল প্রতিবেদন যাচাই-বাছাই করে শাস্তি চূড়ান্ত করে। পরে সেটি বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট অনুমোদন দেয়।
অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগটি এখনো অভিযোগ কমিটি তদন্ত করছে। জানতে চাইলে অভিযোগ কমিটির আহ্বায়ক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বন ও পরিবেশবিদ্যা ইনস্টিটিউটের পরিচালক জরিন আখতার প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা আজকে রাতের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এরপর যৌন নিপীড়নের নিরোধ সেল ব্যবস্থা নেবে। তবে তদন্তে কী পেয়েছেন, এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।
সূত্র – প্রথমআলো