মতিউর রহমান হাসান ওরফে পাগল হাসান (৩৩) একজন প্রতিভাবান সংগীতশিল্পী, গীতিকার ও সুরকার ছিলেন। তাঁর গানের কথা, সুর ও গায়কিতে ভিন্নতা ছিল। তাঁর গান ও সুরের সাধনায় ছিল হাওর-ভাটির মাটির টান। তাঁকে সহজে ভোলা যাবে না। তাঁর মৃত্যু সুনামগঞ্জের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সুনামগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একডেমিতে শিল্পী পাগল হাসানের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় শোকার্ত লোকজন এসব কথা বলেন।
পাগল হাসান আজ সকালে জেলার ছাতক উপজেলা শহরের সুরমা সেতু এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন। তাঁর বাড়ি ছাতক উপজেলার শিমুলতলা গ্রামে। একটি বাস ও অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় অটোরিকশায় তাঁর সঙ্গে থাকা একই গ্রামের সাত্তার মিয়া (৩০) নিহত হন।
আজ বিকেলে শিল্পী পাগল হাসানের লাশ জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে নেওয়া হয়। এ সময় শহরের সংস্কৃতিকর্মী, বন্ধুবান্ধব ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা সেখানে জড়ো হন। অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, পৌরসভা, জেলা শিল্পকলা একাডেমিসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন ও ব্যক্তির পক্ষ থেকে তাঁর মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
পৌর মেয়র নাদের বখত বলেন, ‘পয়লা বৈশাখ দিনভর শহরজুড়ে বিভিন্ন আয়োজনে পাগল হাসানসহ আমরা একসঙ্গে ছিলাম। কয়েকটি আয়োজনে তিনি গান করেছেন। একজন সজ্জন, প্রাণবন্ত মানুষ ছিলেন তিনি। তাঁকে আমরা সহজে ভুলতে পারব না। এই ক্ষতি অপূরণীয়।’
জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক মো. শামছুল আবেদীন বলেন, পাগল হাসানের বিশেষ প্রতিভা ছিল। তরুণদের অতিপ্রিয় ছিলেন তিনি। ভালো শিল্পী, গীতিকার ও সুরকারের পাশাপাশি তিনি একজন ভালো মানুষ ছিলেন। শিল্পকলাকে তিনি সব সময় জমিয়ে রাখতেন।
জেলা প্রশাসকের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও তথ্যপ্রযুক্তি) হোসাইন মুহাম্মদ আল-মুজাহিদ এবং পুলিশ সুপারের পক্ষে সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সাঈদ শিল্পীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
সংগীতশিল্পী পাগল হাসানের ‘আসমানে যাইওনারে বন্ধু…’, ‘জীবন খাতায় প্রেম কলঙ্ক…’, ‘মন আমার মরা নদী…’, ‘মাটির বালাখান…’ এমন বেশ কিছু জনপ্রিয় গান আছে। তিনি স্ত্রী ও দুই ছেলে রেখে গেছেন।
সূত্রঃ প্রথম আলো