মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচ বাংলাদেশির বিরুদ্ধে ঢাকার গুলশান থানায় মামলা করেছে মার্কিন দূতাবাস। গত সোমবার মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তা মিকাইল লি এই মামলা করেন।
মামলার আসামিরা হলেন মফিজুর রহমান (৫৪) ও আশরাফুল আলম ভূঁইয়া (৩৩), মোহাম্মদ জামান, ভাসানি ও মোহাম্মদ নূর আলম।
মামলার অভিযোগে মিকাইল লি অভিযোগ করেন, ১১ ফেব্রুয়ারি মফিজুর রহমান ও আশরাফুল আলম ভূঁইয়া নামের দুই বাংলাদেশি মার্কিন ভিসার জন্য সাক্ষাৎকার দিতে যান। সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় তাঁরা স্বীকার করেছেন তাঁরা দুজন বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন দেশে মানব পাচারে জড়িত। তাঁরা মূলত দালাল হিসেবে কাজ করেন। যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার জন্য তাঁরা ভুয়া নথিও জমা দিয়েছিলেন।
মফিজুর রহমান সম্পর্কে এজাহারে বলা হয়েছে, তিনি বাংলাদেশ থেকে দুবাইয়ে মানব পাচার করেন। পাশাপাশি অন্য দালালদের সঙ্গে মিলে যুক্তরাষ্ট্রে মানব পাচার করেন। তিনি নিজের ভাইকে বাংলাদেশ থেকে প্রথমে ভারত হয়ে দক্ষিণ আমেরিকার দেশে সুরিনামে পাঠান। সেখান থেকে মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যান।
আশরাফুল আলম ভূঁইয়া সম্পর্কে এজাহারে বলা হয়, তিনি সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় বলেছেন, তিনিও মানব পাচারের ক্ষেত্রে দালাল হিসেবে কাজ করেন। তিনি দক্ষিণ আমেরিকার দেশ প্যারাগুয়ে দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে মানব পাচারে সহায়তা করেন। মানব পাচারে তাঁকে অর্থের বিনিময়ে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একজন অভিবাসন কর্মকর্তা সাহায্য করেন বলে জানান।
এজাহারে আরও বলা হয়, মফিজুর রহমান ও আশরাফুল আলম বিপুল পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন দেশে মানব পাচার করেন। তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার জন্য জমা দেওয়া নথিতে নিজেদের গার্মেন্টস ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। তবে তাঁরা মূলত দালাল। তাঁরা বিদেশি রাষ্ট্রের জন্য বিপজ্জনক। মার্কিন দূতাবাস বিশ্বাস করে তাঁরা দুজন মানব পাচারের সুবিধা নিতেই যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। মোহাম্মদ জামান ও ভাসানি নামে তাঁদের দুজন সহযোগীর বিষয়েও তথ্য পাওয়া গেছে। এই চক্রের প্রধান হচ্ছে মোহাম্মদ নূর আলম নামে এক ব্যক্তি।
মার্কিন দূতাবাসের পক্ষ থেকে দায়ের করা মামলার তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। সিটিটিসির উপকমিশনার জসীম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, মামলার নথিপত্র গুলশান থানা থেকে সিটিটিসি আনুষ্ঠানিকভাবে নিয়ে আসার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।