বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিজ্ঞাপন দিতেন তিনি। কেউ আগ্রহী হলে একটি মুঠোফোন আর্থিক সেবার (এমএফএস) নম্বর দিয়ে ২০ হাজার টাকা পাঠাতে বলতেন। টাকা পাওয়ার পর ওই নম্বর বন্ধ করে দিতেন তিনি। এভাবে মো. আর্ন নাফিউল (২৩) নামের এই তরুণ প্রায় ১০ লাখ টাকা তুলে নিয়েছেন বলে দাবি পুলিশের।
এসব অভিযোগে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) গতকাল শনিবার বগুড়ার শিবগঞ্জ থানার সংসারদীঘি এলাকা থেকে নাফিউলকে গ্রেপ্তার করে।
শুধু নাফিউল নন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচার করে বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের নামে প্রতারণার অভিযোগে মাহদী হাসান খান (২২) ও আবদুর রহমান সোহান (২০) নামের দুই তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
নাফিউলকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি আজ রোববার রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ।
হারুন-অর-রশীদ বলেন, এই চক্রের সদস্যরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সরবরাহের কথা বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন গ্রুপে প্রচার ও বিভিন্ন গ্রুপের পোস্টে মন্তব্য করে ভর্তি–ইচ্ছুক সাধারণ পরীক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করেন। ভর্তি–ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা সহজে প্রশ্নপত্র পাওয়ার আশায় টাকা পাঠিয়ে প্রতারণার শিকার হন।
ডিবি কর্মকর্তা জানান, নাফিউলের বাড়ি জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলায়। তিনি একটি কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁসের নামে প্রতারণা করে আসছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে গতকাল শনিবার রাজধানীর শাহবাগ থানায় সাইবার নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা হয়েছে।
পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের বিজ্ঞাপন
সিআইডি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, এক বছর ধরে বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার সময় মাহদী হাসান ফেসবুক আইডি ও পেজ খুলে প্রশ্নপত্র পাওয়া যায় বলে বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রতারণা করে আসছিলেন। কেউ আগ্রহী হলে তাঁকে এমএফএস নম্বরে টাকা পাঠাতে বলতেন। তবে নিজের নামে রেজিস্ট্রেশনকৃত এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার না করে ভুয়া নামে পার্সোনাল ও মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতেন।
মাহদীকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে সিআইডি জানায়, তিনি এসএসসি, এইচএসসি, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা, মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা, প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগসহ অন্যান্য পাবলিক পরীক্ষার আগে এভাবে বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রতারণা করতেন।
সিআইডি আরও জানায়, গ্রেপ্তার আবদুর রহমান একসময় একটি এমএফএস কোম্পানিতে চাকরি করতেন। সেই সুবাদে তিনি কোনো রকম কাগজপত্র ছাড়াই ভুয়া দোকানের নামে এমএফএসের মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট খুলে দিতেন। প্রতারণার টাকা লেনদেনের জন্য সেই মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা হতো। গ্রেপ্তার দুজনের বিরুদ্ধে টঙ্গী পশ্চিম থানায় একটি মামলা করা হয়েছে।
সূত্রঃ প্রথম আলো