November 21, 2024
কিকস্টার্ট এফসি ক্লাবের সতীর্থদের সঙ্গে সাবিনা।ছবি: সাবিনা খাতুনের ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া
কিকস্টার্ট এফসি ক্লাবের সতীর্থদের সঙ্গে সাবিনা।ছবি: সাবিনা খাতুনের ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া

ভিনদেশের ক্লাবে খেলতে গিয়ে কেমন অভিজ্ঞতা হচ্ছে সাবিনা-সানজিদার

ভারতের নারী ফুটবল লিগে দুই ক্লাবের হয়ে খেলছেন বাংলাদেশের জাতীয় নারী ফুটবল দলের সাবিনা খাতুন ও সানজিদা আক্তার। লিগের বিরতিকালীন সময়ে সাবিনা দেশে এলেও সানজিদা আছেন ভারতেই। ভিনদেশের ক্লাবে খেলতে গিয়ে দুজনের কেমন অভিজ্ঞতা হলো? জানার চেষ্টা করলেন নাইর ইকবাল

কিকস্টার্ট এফসি ক্লাবের সতীর্থদের সঙ্গে সাবিনা
কিকস্টার্ট এফসি ক্লাবের সতীর্থদের সঙ্গে সাবিনাছবি: সাবিনা খাতুনের ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া

আগেও বহুবার বিদেশে গেছেন সানজিদা আক্তার। কিন্তু কেন যেন কখনোই ভারতে যাওয়া হয়ে ওঠেনি। জাতীয় দলের হয়ে তো বটেই, বয়সভিত্তিক বিভিন্ন দলেও ভারতের বিপক্ষে তাঁর কম খেলা হয়নি। কিন্তু সেই খেলাগুলো কখনোই ভারতের মাটিতে হয়নি। অবশেষে তাঁর ভারতযাত্রা হয়ে উঠল। যাত্রাটা অবশ্য একটু ভিন্ন। বিপক্ষে নয়, বরং ভারতেরই শতবর্ষী পুরোনো ক্লাব ইস্টবেঙ্গলের হয়ে খেলতে কলকাতায় গেছেন সানজিদা।

ভারতে কেমন কাটছে সানজিদার দিনকাল? খেলার দৃষ্টিকোণ থেকে বললে অবশ্যই দুর্দান্ত। এরই মধ্যে দুটি ম্যাচ খেলা হয়ে গেছে। একটিতে তো ৪০ গজ দূর থেকে নেওয়া ফ্রি–কিক থেকে দারুণ এক গোল করে হইচই ফেলে দিয়েছেন। তারপরও সানজিদার মনে আক্ষেপ। দুটি ম্যাচ খেলে একটিতেও দলকে জেতাতে পারলেন না, ‘এখানে তো এসেছি ইস্টবেঙ্গলকে সাফল্য উপহার দিতে। দুটি ম্যাচ খেললাম, এখনো জিততে পারলাম না, এটা হয় নাকি! এখন আমার একটিই লক্ষ—দলকে জেতানো। দল না জিতলে নিজে ভালো খেলে কোনো লাভ নেই।’

ফুটবলের বাইরে আর কী করছেন? ঘোরাফেরা, কেনাকাটা? এই প্রশ্নে সানজিদার মনটা যেন একটু খারাপই হলো, ‘দুই ম্যাচ খেলেছি, খেলার বাইরের সময়টা তো অনুশীন আর ক্লাবেই কেটে যাচ্ছে। কেনাকাটাও তেমন করিনি। তবে ভারত বড় দেশ, লিগের খেলাও হয় বিভিন্ন রাজ্যে, ভিন্ন ভিন্ন শহরে, এই সূত্রে যা একটু ঘোরাফেরার সুযোগ হয়।’

ভারতে সানজিদা আক্তার
ভারতে সানজিদা আক্তারছবি: ফুটবলারের ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া

মেয়েদের জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন অবশ্য ভারত বিষয়ে অভিজ্ঞ। ২০১৮ সালেও সেথু এফসির হয়ে ভারতের লিগে খেলেছেন। এবার অবশ্য তাঁর ক্লাব বেঙ্গালুরুভিত্তিক ‘কিকস্টার্ট এফসি’। সানজিদার কিছুদিন আগেই ভারতে গিয়েছিলেন সাবিনা। তবে এবার সেখানে অবস্থানের অভিজ্ঞতাটা তাঁর একটু মিশ্র। ক্লাবে বন্ধুবান্ধব ভালোই হয়েছে। বলতে গেলে তাঁদের সঙ্গে একেবারে মিশে গেছেন। কিন্তু ‘বাড়তি কিছু’ করার সুযোগ সেভাবে হয়ে ওঠেনি। বাড়তি মানে ওই বেড়ানো, কেনাকাটা—এসব আরকি, ‘খেলা নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়, তাই অন্যকিছু ভাবার সুযোগ কম। তবে ভারতে এসেছি আর একটু ঘোরাফেরা করব না, কেনাকাটা করব না, সেটা কীভাবে হয়! তবে এর আগে মনোযোগটা পুরোপুরি খেলায়।’

অবশ্য খেলাতেই বা মনোযোগটা ঠিকঠাক দিতে পারছেন কই। দুটি ম্যাচ খেলেই হালকা চোটে সানজিদার ইস্টবেঙ্গলের বিপক্ষে ম্যাচটা খেললেন মাত্র ৪ মিনিট। এর ওপর আবার মায়ের অসুস্থতার খবর। তাই লিগের বিরতিতে (২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিরতি) দেশে ফিরে এসেছেন সাবিনা। সানজিদা অবশ্য ভারতেই থেকে গেছেন।

বাংলাদেশ জাতীয় নারী দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন (ডানে) ও মিডফিল্ডার সানজিদা আক্তার
বাংলাদেশ জাতীয় নারী দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন (ডানে) ও মিডফিল্ডার সানজিদা আক্তারইনস্টাগ্রাম

উনি তো আমার বড় বোনের মতো

ভারতবাসে সানজিদা-সাবিনা দুজনেই দুজনের বড় বন্ধু। সেটি তো হবেই। ফুটবল মাঠে যে তাঁরা সব সময়ের সতীর্থ। এই প্রথম ভারতের মাটিতেই দুজন দুটি ভিন্ন দলের জার্সি পরে খেললেন। বাফুফের আবাসিক ক্যাম্পে কত বছর ধরে একসঙ্গে থাকা। ভারতে গিয় আলাদা থাকলেও দুজনের কথা হবে না, খুনসুটি হবে না, এ হয় নাকি! সানজিদার কথা, ‘সাবিনা আপুর সঙ্গে তো আমার প্রায় প্রতিদিনই কথা হয়। উনি তো আমার বড় বোনের মতো। কিছু হলেই তাঁকে ফোন করি। উনি পরামর্শ দেন। এর বাইরে আমাদের নিজেদের মধ্যকার গল্প তো আছেই। হোয়াটসঅ্যাপে ভয়েস কলই বেশি হয়, ভিডিও কল মাঝেমধ্যে। সেদিন ইস্টবেঙ্গল-কিকস্টার্ট ম্যাচের পর মাঠে দাঁড়িয়েই কথা হলো। সেদিন দেখাটা হয়েছে বেশ কিছুদিন পরই।’

ভারতে গিয়ে লিগ খেলাটা দেশের এই দুই শীর্ষ নারী ফুটবল তারকার জন্যই অনেক বড় অভিজ্ঞতা। সেটিই বললেন সাবিনা, ‘ভারতের নারী ফুটবল লিগ অনেক প্রতিযোগিতামূলক। দেশের হয়ে খেলার সময় এই অভিজ্ঞতা আমাদের কাজে লাগবে।’

সানজিদা অবশ্য সাবিনার মতো অতটা আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে গেলেন না। সোজাসাপটাই বললেন, ভারতে আনন্দেই কাটছে তাঁর দিনকাল (সেটি অবশ্য সানজিদার ভেরিফায়েড ফেসবুকে ঢুঁ মারলেও বোঝা যায়), ‘ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে খেলে ভালো লাগছে। সবাই আমাকে খুব আপন করে নিয়েছে। এটাই ভালো লাগে।’

এই ভালো লাগাটাই পারফরম্যান্সে পরিণত হোক। সানজিদা-সাবিনাদের কাছে এটিই তো সবার চাওয়া। এরপর নাহয় ভারত-দর্শনটা করবেন তাঁরা

Check Also

যে দেশেই যান, সেখানের মানুষের জীবনযাত্রা অনুসরণ করতে চেষ্টা করুনছবি: পেক্সেলস ডটকম

রমজান মাসে বিদেশ ভ্রমণে যাচ্ছেন? এই বিষয়গুলো মাথায় রাখুন

রমজান মাসে মুসলিমপ্রধান দেশের মানুষের জীবনধারা বদলে যায়। তবে এ মাসেও সেসব দেশে অনেকে ভ্রমণে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Sahifa Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.