পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বামীর নির্যাতনের প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে স্ত্রী নুরুন্নাহার আক্তার সুমি (২৪)। দুই সন্তানের জননী সুমিকে যৌতুকের দাবিতে অমানুষিক নির্যাতন করেছে বলে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে তার অভিযোগ। ভুক্তভোগী সুমি উপজেলার দক্ষিণ সোনাখালী গ্রামের বাবুল শিকদারের মেয়ে।
সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এই সংবাদ সম্মেলন করেন ওই গৃহবধূ।
লিখিত বক্তব্যে সুমি বলেন, ২০১৭ সালে পার্শ্ববর্তী পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠালতলী ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের আলতাফ তালুকদারের ছেলে মনির তালুকদারের সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে স্বামীকে মোটরসাইকেল, ফ্রিজ, টিভি, স্বর্ণালংকারসহ ১৫ লাখ টাকার মালামাল দেওয়া হয়। দাম্পত্যজীবনে তাদের সংসারে দেড়বছর বয়সী একটি পুত্র ও দেড়মাস বয়সী এক কন্যাসন্তান রয়েছে। ২০১৯ সালে মনির তালুকদার চরদুয়ানী বাজারে নতুন বিল্ডিং নির্মাণ করার সময় শ্বশুরবাড়ি থেকে ৫ লাখ টাকা নেয়। গত কয়েকমাস পূর্বে বিদেশে থাকা অবস্থায় সুমির বাবা অসুস্থ হয়ে দেশে আসলে তার শরীরে ক্যান্সার ধরা পড়ে। তাকে চিকিৎসা করাতে গিয়ে তার পরিবার এখন প্রায় নিঃস্ব হয়ে পড়েছে।
সুমি আরও বলেন, পাষণ্ড স্বামী মনির তালুকদার হোসেনপুর গ্রামের বাড়িতে নতুন বিল্ডিং করার জন্য বাবার বাড়ি থেকে আবারও টাকা এনে দেওয়ার জন্য আমাকে চাপ দেয়। আমি তা অস্বীকার করলে গত ২২ ডিসেম্বর আমাকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন মারধর করে। এ খবর মোবাইলে জানতে পেরে আমার মা মঠবাড়িয়া উপজেলা চেয়ারম্যানের দ্বারস্থ হন। মঠবাড়িয়া উপজেলা চেয়ারম্যান বিষয়টি পাথরঘাটা উপজেলা চেয়ারম্যানকে অবহিত করলে আমার মা ও নানা পাথরঘাটা উপজেলা চেয়ারম্যানকে নিয়ে ঘটনাস্থল হোসেনপুর গ্রামে যান।
সুমির অভিযোগ, এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যানের সামনেই তার মা ও নানাকে মারধর করে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এ খবর শুনে সুমির অন্যান্য স্বজন মোটরসাইকেলযোগে ওই বাড়িতে গেলে তাদেরকেও তৃতীয় দফায় মারধর করা হয়। পরে আহতরা সুমিকে নিয়ে পালিয়ে এসে মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন।
এদিকে স্বামী মনির তালুকদার হামলার বিষয়টি আড়াল করতে সুমির স্বজনদের বিরুদ্ধে উল্টো পাথরঘাটা থানায় একটি মিথ্যা লুটের মামলা দায়ের করে। পরে সুমির মা বাদী হয়ে নির্যাতনের ঘটনায় পাথরঘাটা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
সংবাদ সম্মেলনে দুই সন্তান নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন নুরুন্নাহার আক্তার সুমি।