১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ‘ভোলা সাইক্লোন’ উপকূলে আঘাত হানে। জাতিসংঘের বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার মতে ভোলা সাইক্লোন পৃথিবীর ইতিহাসে ভয়ঙ্করতম প্রাণঘাতী একটি ঝড়।
উপকূলের জন্য হোক একটি দিন, জোরালো হোক উপকূল সুরক্ষার দাবি’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে সাতক্ষীরা শ্যামনগরের কাশিমাড়ি সংলগ্ন খোলপেটুয়া নদীতে অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়। ঘূর্ণিঝড়ে প্রয়াত উপকূলবাসীকে স্মরণ করে ১২ নভেম্বরকে ‘উপকূল দিবস’ ঘোষণার দাবি জানানো হয়েছে কর্মসূচি থেকে।
শুক্রবার ১২ নভেম্বর ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস ও স্টুডেন্ট সলিডারিটি টিমের আয়োজিত অবরোধ কর্মসূচিতে জলবায়ু সুবিচার ও উপকূলবাসীর স্বার্থ সুরক্ষায় ১২ নভেম্বরকে উপকূল দিবস হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে ঘোষণার দাবি জানানো হয়।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের উপকূলে অফুরন্ত সম্ভাবনা রয়েছে। উপকূলের বিপুল জনগোষ্ঠী জাতীয় অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখছে। তা সত্ত্বেও উপকূলের প্রায় ৫ কোটি মানুষ চরম ঝুঁকিতে রয়েছে। জলবায়ু বিরূপ পরিবর্তনের ফলে এই ঝুঁকি দিন দিন বাড়ছে। উপকূলের বহু এলাকা অরক্ষিত থেকে যাচ্ছে যুগের পর যুগ।
তারা বলেন, উপকূলবাসীর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় রাষ্ট্রীয়ভাবে একটি দিবস ঘোষণা এখন সময়ের দাবি। উপকূল দিবস ঘোষণা করা হলে সরকার, উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠান, সংবাদ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে উপকূলের গুরুত্ব বাড়বে। এর মাধ্যমে উপকূলের সুরক্ষা ও সেখানকার জনগোষ্ঠীর অধিকার ও ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠিত হবে।
এ সময় স্টুডেন্ট সলিডারিটি টিমের সাধারণ সম্পাদক রাইসুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জাহাঙ্গীর, আব্দুর রহমান, শারমিন, হুমাইরা, জাকারিয়া ও সুমন।
এ দিনে নিহতদের স্মরণে শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে পৃথক মানববন্ধন করেছে উপকূল ফাউন্ডেশন, দুর্যোগ অনুধাবন, চন্দ্রকলি ও সেইভ ফিউচার বাংলাদেশ। তারা ১২ নভেম্বরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘উপকূল দিবস’ ঘোষণা ও দুর্যোগ ঝুঁকি কমাতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানায়।
দুর্যোগ অনুধাবন ও চন্দ্রকলির মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের প্রভাষক মো. জুয়েল মিয়া, চন্দ্রকলির সমন্বয়ক মো. শাখাওয়াত উলল্গাহ ও দুর্যোগ অনুধাবনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মো. কবির হোসেন।
জুয়েল মিয়া বলেন, উপকূলে নেওয়া প্রকল্পগুলোতে দুর্নীতি প্রতিরোধ, সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং পরিকল্পনায় সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করা গেলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আরও কার্যকর হবে।
শাখাওয়াত উলল্গাহ বলেন, উপকূলে সবুজ বেষ্টনী চাই। বন ধ্বংসের ফলে বৃহত্তর নোয়াখালীসহ দেশের বিভিন্ন উপকূল আজ ভয়াবহ ভাঙনের শিকার হচ্ছে। বন ফিরে পেতে চাই।