মঠবাড়িয়ায় চিকিৎসকের অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যু অভিযোগে মামলা হয়েছে।
মৃত নবজাতকের বাবা শাহিন মিয়া বাদী হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার চৌধুরী ফাতিমা কবিরকে প্রধান এবং অজ্ঞাত চিকিৎসক ও নার্সকে আসামি করে শুক্রবার (২২ অক্টোবর) রাতে মঠবাড়িয়া থানায় এ মামলাটি করেন। শাহিন মিয়া উপজেলার চরকগাছিয়া গ্রামের মৃত হানিফ মিয়ার ছেলে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, শাহিন মিয়ার স্ত্রী সনিয়া আক্তারকে পৌর শহরের চৌধুরী ফাতিমা কবিরের গয়ালীপাড়ায় ব্যক্তিগত চেম্বারে দীর্ঘদিন ধরে গর্ভবতী অবস্থায় চিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে প্রসব বেদনা শুরু হলে স্বজনরা তাকে ওই চেম্বারে নিয়ে আসেন। এ সময় চৌধুরী ফাতিমা কবিরের পরামর্শে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করান। শেষে তার কথিত ক্লিনিকে অপরেশন থিয়েটার না থাকা সত্ত্বেও অতিরিক্ত অর্থ লাভের আশায় ভর্তি করান।
সেখানে তিনি তার সহযোগী চিকিৎসক ও নার্সদের নিয়ে প্রায় ১০ ঘণ্টা স্বাভাবিক ডেলিভারির জন্য বিভিন্ন ওষুধ ও ইনজেকশন পুশ করে কালক্ষেপণ করেন। এতে ওই প্রসূতির অবস্থার অবনতি ঘটলে অন্য ক্লিনিকে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেন। পরবর্তীতে প্রসূতিকে পার্শ্ববর্তী একটি ক্লিনিকে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার রাজু চন্দ্র সরকার সিজার করেন। নবজাতকের শরীরের বিভিন্ন স্থানে থেঁতলানো ও পায়ের হাড় ভাঙা অবস্থায় মুমূর্ষু ছেলে শিশু জন্ম দেন। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে শহরের মা-শিশু ও জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে শিশুটি মারা যায়।
অভিযুক্ত চৌধুরী ফাতিমা কবির তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ওই অন্তঃসত্ত্বা মহিলা প্রসব বেদনা নিয়ে এলে তাকে অন্য ক্লিনিকে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে রোগীর স্বজনরা স্বাভাবিক ডেলিভারির জন্য জোরপূর্বক আমার চেম্বারে অপেক্ষা করতে থাকেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ও ওই সময়ের ওই কিনিকের কর্তব্যরত চিকিৎসক রাজু চন্দ্র সরকার বলেন, সিজারিয়ান অপারেশনের পর শিশুটির অবস্থা খুব মুমুর্ষ থাকায় দ্রুত চিকিৎসার জন্য শহরের মা-শিশু ও জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছিল।
মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মামলাটি তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।