পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় ২টি সড়কের ১৮টি জারাজীর্ণ বেইলি সেতু রয়েছে। এসব বেইলি সেতুর অধিকাংশ জোড়াতালি দিয়ে যান চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে যেখানে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
মঠবাড়িয়া-পাথরঘাটা সড়কের ঝুঁকিপূর্ণ এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন দূরপাল্লার বাস, ট্রাকসহ শতাধিক ভারী যানবাহন চলাচল করে।
মঠবাড়িয়া উপজেলার মোল্লারহাট বাজারসংলগ্ন খালের ওপর বেইলি সেতুটি কয়েক বছর ধরে জারাজীর্ণ হয়ে পড়ে রয়েছে। সেতুর পাটাতনের প্লেটে রয়েছে অসংখ্য জোড়াতালি। কিছুদিন পরপর সেতুটির পাটাতন ভেঙে যায়। আবার মেরামত করা হয়। যেকোনো সময় সেতুটি ভেঙে বড় ধরনের দুর্ঘটনায় আশঙ্কা করছেন বাস ও ট্রাক চালকেরা।
পিরোজপুর সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, পিরোজপুরের সওজ বিভাগের আওতায় মঠবাড়িয়া-পাথরঘাটা সড়কে ১২টি এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের মঠবাড়িয়া-সাপলেজা সড়কে ৬টি বেইলি সেতু রয়েছে। এসব বেইলি সেতু আশি দশক ও নব্বইয়ের দশকের শুরুতে স্থাপন করা। মঠবাড়িয়া-পাথরঘাটা সড়কের ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি সেতুগুলো হলো ঝাউতলা বাজার সেতু, দেবীপুর মাদ্রাসা সংলগ্ন সেতু, সাফা বাজার সেতু, তুষখালী সেতু, মাঝেরপুল সেতু, বহেরাতলা সেতু, মঠবাড়িয়া বাজার সেতু, থানাপাড়া সেতু, দফাদার বাড়ি সেতু, মোল্লারহাট সেতু, দক্ষিণ গুলিসাখালী সেতু ও সিএনবি সেতু। মঠবাড়িয়া-সাপলেজা সড়কের থানা সংলগ্ন কাচারিবাড়ি সেতু, মোল্লাবাড়ি সেতু, ভাড়ানীখাল সেতু, সাপলেজা গুচ্ছগ্রাম সেতু, চরকগাছিয়া সেতু ও দক্ষিণ চরকগাছিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন সেতু।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ৮ মার্চ বরিশালে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিবের নেতৃত্বে উচ্চপর্যায়ের একটি সভা হয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয় একটি প্রকল্পের মাধ্যমে বেইলি সেতুগুলো সরিয়ে সেখানে গার্ডার সেতু নির্মাণ করা হবে। তবে প্রকল্পটি এখানো বাস্তবায়িত হয়নি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, অধিকাংশ সেতুর পাটাতনের প্লেট ভেঙে ও ছিদ্র হয়ে গেছে। বহেরাতলা সেতু ও বাজার সেতু পাটাতনের প্লেট ভেঙে যাওয়ার পর জোড়াতালি দিয়ে সেতু যান চলাচলের উপযোগী করা হয়েছে।
এ ছাড়া কাচারিবাড়ি সেতু, গুচ্ছগ্রাম সেতু, চরকগাছিয়া সেতু, দক্ষিণ চরকগাছিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সংলগ্ন সেতু জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। সেতুগুলোর পাটাতনের প্লেট ভেঙে গেছে। দক্ষিণ চরকগাছিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সংলগ্ন সেতুর প্লেটে বড় বড় ছিদ্র হয়ে গেছে।
মঠবাড়িয়ার পরিবহন শ্রমিক মো. মিজানুর রহমান বলেন, মঠবাড়িয়া-পাথরঘাটা সড়কের সকল বেইলি সেতুঈ জরাজীর্ণ। এ পথে ঝুঁকি নিয়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশালসহ ১০ থেকে ১২ রুটে প্রতিদিন বাস চলাচল করে। এ ছাড়া পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের (বিএফডিসি) মাছবাহী ট্রাকগুলো এ পথে চলাচল করে। সেতুগুলোর স্থানে জরুরি ভিত্তিতে গার্ডার সেতু নির্মাণ করা প্রয়োজন। তা না হলে যেকোনো সময় সেতু ভেঙে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) মঠবাড়িয়া কার্যালয়ের উপজেলা প্রকৌশলী বদরুল আলম বলেন, বেইলি সেতুগুলোর স্থলে পর্যায়ক্রমে গার্ডার সেতু নির্মাণ করা হবে।